শ্রীমদ্ভাগবত ৮ম স্কন্ধ, ২৪তম অধ্যায়ের সংক্ষিপ্তসার: এই অধ্যায়ে, ভগবান বিষ্ণু মৎস্য অবতারে আবির্ভূত হন। মহাপ্রলয়ের সময়, রাজা সত্যব্রত (যিনি পরবর্তীতে বৈবস্বত মনু নামে পরিচিত হন) গঙ্গার তীরে তপস্যা করছিলেন। একদিন, তিনি একটি ছোট মাছ দেখতে পান এবং তাকে জলাশয়ে রাখেন। মাছটি দ্রুত বড় হতে থাকে এবং রাজা তাকে বড় জলাশয়ে স্থানান্তরিত করেন। অবশেষে, মাছটি বিশাল আকার ধারণ করে এবং রাজা বুঝতে পারেন যে এটি ভগবান বিষ্ণুর অবতার। ভগবান বিষ্ণু রাজাকে মহাপ্রলয়ের আগমনের কথা জানান এবং তাকে একটি বিশাল নৌকা তৈরি করতে বলেন। রাজা সত্যব্রত সেই নির্দেশ অনুসারে নৌকা তৈরি করেন এবং প্রলয়ের সময় সমস্ত ঋষি, ঔষধি, বীজ এবং অন্যান্য জীবকে সেই নৌকায় স্থান দেন। ভগবান মৎস্য অবতারের সাহায্যে নৌকাটি প্রলয়ের জলরাশি থেকে রক্ষা পায় এবং নতুন সৃষ্টির সূচনা হয়। এই অধ্যায়ে ভগবান বিষ্ণুর করুণা এবং ভক্তদের প্রতি তাঁর স্নেহের কথা বর্ণিত হয়েছে। এটি আমাদের শেখায় যে ভগবান সর্বদা তাঁর ভক্তদের রক্ষা করেন এবং তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করেন। আশা করি এই সংক্ষিপ্তসারটি আপনার জন্য উপকারী হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত ৮ম স্কন্ধের ২৩তম অধ্যায়ের সারাংশ: এই অধ্যায়ে, দেবতারা স্বর্গলোক পুনরুদ্ধার করেন। বলি মহারাজের আত্মসমর্পণের পর, ভগবান বিষ্ণু তাঁকে আশীর্বাদ করেন এবং পাতাল লোকের রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। দেবতারা তাঁদের স্বর্গীয় স্থান পুনরুদ্ধার করেন এবং ভগবান বিষ্ণুকে কৃতজ্ঞতা জানান। ভগবান বিষ্ণু বলি মহারাজের ভক্তি ও আত্মত্যাগের প্রশংসা করেন এবং তাঁকে আশীর্বাদ করেন যে, ভবিষ্যতে তিনি ইন্দ্রের স্থান গ্রহণ করবেন। এই অধ্যায়ে ভক্তি, আত্মত্যাগ এবং ভগবানের করুণা ও আশীর্বাদের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের অষ্টম স্কন্ধের ২২তম অধ্যায়ে, বলি মহারাজ এর আত্মসমর্পণের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এই অধ্যায়ে বলি মহারাজ তার সমস্ত সম্পত্তি এবং জীবন ভগবান বিষ্ণুর বামন অবতারের কাছে সমর্পণ করেন। বলি মহারাজ যখন তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন পা জমি দান করেন, তখন বামনদেব তার দুই পা দিয়ে সমগ্র পৃথিবী এবং স্বর্গ অধিকার করেন। তৃতীয় পা রাখার জন্য স্থান না থাকায়, বলি মহারাজ তার মাথা পেতে দেন। ভগবান বিষ্ণু বলি মহারাজের এই আত্মসমর্পণ এবং ভক্তি দেখে তাকে পাতাল লোকের রাজা হিসেবে আশীর্বাদ করেন এবং তার সমস্ত পাপ মুক্ত করেন। এই অধ্যায়ে বলি মহারাজের ভক্তি, আত্মসমর্পণ এবং ভগবানের করুণা ও দয়া সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এটি আমাদের শেখায় যে ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ এবং ভক্তি আমাদের জীবনের সমস্ত বাধা দূর করতে পারে এবং আমাদের মুক্তি দিতে পারে। Watch this video also: কৃষ্ণের ছবি থাকা জপ থলি ব্যবহার করলে কি অপরাধ হয়? Deboprio Sarkar. https://youtu.be/xYZy9W_kIBk?feature=shared
শ্রীমদ্ভাগবত ৮ম স্কন্ধ, অধ্যায় ২১-এর সংক্ষিপ্তসার: এই অধ্যায়ে, বলি মহারাজকে ভগবান বিষ্ণু তাঁর বামন অবতারে বন্দী করেন। বলি মহারাজ তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন পা জমি দান করতে সম্মত হন। ভগবান বামনদেব তাঁর দুই পা দিয়ে সমগ্র পৃথিবী ও স্বর্গলোক দখল করেন এবং তৃতীয় পা রাখার জন্য বলি মহারাজের মাথা চেয়ে নেন। বলি মহারাজ বিনম্রভাবে তাঁর মাথা ভগবানের পায়ের কাছে রাখেন। এইভাবে, বলি মহারাজ তাঁর সমস্ত সম্পত্তি ও ক্ষমতা হারিয়ে ভগবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ভগবান তাঁর ভক্তির প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে পাতাল লোকের রাজা হিসেবে আশীর্বাদ করেন। এই অধ্যায়টি বলি মহারাজের ভক্তি, বিনম্রতা ও আত্মসমর্পণের গুরুত্বকে তুলে ধরে।
শ্রীমদ্ভাগবত ৮ম স্কন্ধের ২০তম অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ: এই অধ্যায়ে, বলি মহারাজের আত্মসমর্পণের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। বলি মহারাজ ছিলেন অসুরদের রাজা এবং তিনি স্বর্গলোক জয় করেছিলেন। ভগবান বিষ্ণু বামন অবতারে এসে বলি মহারাজের কাছ থেকে তিন পা জমি চাইলেন। বলি মহারাজ তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে সমস্ত পৃথিবী এবং স্বর্গলোক ভগবানকে দান করেন। ভগবান বামন তাঁর তৃতীয় পা দিয়ে বলি মহারাজকে পাতাল লোক পাঠান। বলি মহারাজের এই আত্মসমর্পণ ভক্তির এক মহান উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
শ্রীমদ্ভাগবতমের অষ্টম স্কন্ধের ১৯তম অধ্যায়ের সংক্ষিপ্তসার: এই অধ্যায়ে, ভগবান বামনদেব মহারাজ বলির কাছ থেকে দান গ্রহণ করেন। বামনদেব, যিনি ভগবান বিষ্ণুর অবতার, একজন বামন ব্রাহ্মণের রূপে মহারাজ বলির কাছে আসেন এবং তিন পা জমি দান হিসেবে চান। মহারাজ বলি তাঁর বিনীত অনুরোধে সম্মত হন এবং তিন পা জমি দান করেন। তখন বামনদেব তাঁর বিশাল রূপ ধারণ করেন এবং এক পা দিয়ে সমগ্র পৃথিবী এবং দ্বিতীয় পা দিয়ে স্বর্গলোক আচ্ছাদিত করেন। তৃতীয় পা রাখার জন্য আর কোনো স্থান না থাকায়, মহারাজ বলি নিজের মাথা বামনদেবের পায়ের কাছে রাখেন। এইভাবে, মহারাজ বলি তাঁর সমস্ত সম্পত্তি এবং নিজেকে ভগবানের কাছে সমর্পণ করেন। এই অধ্যায়ে ভক্তির মহিমা এবং ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। মহারাজ বলির এই আত্মসমর্পণ ভক্তদের জন্য একটি মহান উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ এর অষ্টম স্কন্ধের অষ্টাদশ অধ্যায়ে, ভগবান বামনদেব এর আবির্ভাব এবং মহারাজ বলির যজ্ঞস্থলে তাঁর আগমন বর্ণিত হয়েছে। ভগবান বামনদেব, কশ্যপ মুনি ও অদিতিকে তাদের পুত্র হিসেবে নিজেকে প্রকট করার প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর শরীর ছিল শ্যামবর্ণ এবং তিনি শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম ধারণ করেছিলেন। জন্মলীলা প্রদর্শন করার পর, ভগবান বিষ্ণু একটি নটের (বামন) রূপ ধারণ করেন। মহারাজ বলির যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হয়ে, বামনদেব তাঁর পবিত্র পদধূলি দিয়ে বলিকে আশীর্বাদ করেন। বলি মহারাজ তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেন এবং তাঁর ইচ্ছা পূরণের জন্য তাঁকে যা খুশি তাই প্রার্থনা করতে বলেন। এই অধ্যায়ে বামনদেবের জন্মলীলা, তাঁর ব্রাহ্মণত্ব গ্রহণ এবং বলি মহারাজের যজ্ঞস্থলে তাঁর আগমন ও আশীর্বাদ প্রদানের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের অষ্টম স্কন্ধের সপ্তদশ অধ্যায়ে, ভগবান বিষ্ণু দেবী অদিতির পুত্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্মতি দেন। এই অধ্যায়ে, দেবী অদিতি পায়ো-ব্রত পালন করার পর ভগবান বিষ্ণু তাঁর সামনে আবির্ভূত হন। অদিতি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেন যাতে তিনি তাঁর পুত্রদের (আদিত্যদের) পুনরুদ্ধার করেন। ভগবান বিষ্ণু অদিতির প্রার্থনা শুনে তাঁকে আশীর্বাদ দেন এবং বলেন যে তিনি তাঁর পুত্র হিসেবে জন্মগ্রহণ করবেন। ভগবান বিষ্ণু অদিতিকে জানান যে তিনি বামন অবতারে জন্মগ্রহণ করবেন এবং তাঁর পুত্রদের পুনরুদ্ধার করবেন। এই অধ্যায়ে মূলত ভক্তির মাধ্যমে ভগবানের কৃপা লাভের গুরুত্ব এবং ভগবানের অবতার গ্রহণের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের অষ্টম স্কন্ধের ষোড়শ অধ্যায়ে, “ পয়ো-ব্রত প্রক্রিয়া” নামে পরিচিত। এই অধ্যায়ে দেবী অদিতি তাঁর পুত্রদের (আদিত্যদের) পুনরুদ্ধারের জন্যজন্য বিশেষ ব্রত পালন করেন। অদিতি, কশ্যপ মুনির পত্নী, তাঁর পুত্রদের হারানোর কারণে অত্যন্ত দুঃখিত ছিলেন। তিনি কশ্যপ মুনির পরামর্শে পায়ো-ব্রত পালন শুরু করেন। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে তিনি ভগবান বিষ্ণুর কৃপা লাভ করেন। ব্রত পালনের সময়, অদিতি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলেন এবং নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মন্ত্র উচ্চারণ করেন। অদিতির এই ব্রত পালনের ফলে ভগবান বিষ্ণু তাঁর সামনে আবির্ভূত হন এবং তাঁকে আশীর্বাদ দেন যে, তিনি তাঁর পুত্রদের পুনরুদ্ধার করবেন। এই অধ্যায়ে মূলত ভক্তির মাধ্যমে ভগবানের কৃপা লাভের গুরুত্ব এবং ব্রত পালনের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ এর অষ্টম স্কন্ধের পঞ্চদশ অধ্যায়ে "বালি মহারাজের বীরত্ব" সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়ে, বালি মহারাজের অসাধারণ বীরত্ব এবং তার দানশীলতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। বালি মহারাজ ছিলেন অসুরদের রাজা এবং তিনি তার শক্তি ও সাহসের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এই অধ্যায়ে, বালি মহারাজ কিভাবে ইন্দ্র এবং অন্যান্য দেবতাদের পরাজিত করেন এবং স্বর্গের অধিকারী হন তা বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও, বালি মহারাজের দানশীলতা এবং তার প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য তার দৃঢ় সংকল্পের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এই অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তু হল বালি মহারাজের বীরত্ব, তার দানশীলতা এবং তার প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য তার দৃঢ় সংকল্প।
শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ এর অষ্টম স্কন্ধের চতুর্দশ অধ্যায়ে “বিশ্ব পরিচালনার ব্যবস্থা” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়ে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিবের নেতৃত্বে দেবতারা কিভাবে বিশ্ব পরিচালনা করেন তা বর্ণনা করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্তরের পরিচালনার জন্য বিভিন্ন দেবতা এবং তাদের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, এই অধ্যায়ে মহর্ষি নারদ মুনি এবং অন্যান্য ঋষিদের পরামর্শ এবং তাদের ভূমিকার কথাও বলা হয়েছে। এই অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তু হল কিভাবে দেবতারা তাদের দায়িত্ব পালন করেন এবং বিশ্বকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করেন।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের অষ্টম স্কন্ধের ১৩তম অধ্যায় ভবিষ্যতের মনুদের বর্ণনা নিয়ে আলোচনা করে। এখানে কিছু মূল বিষয় তুলে ধরা হলো: 1. ভবিষ্যতের মনুরা: এই অধ্যায়ে ভবিষ্যতের মনুদের নাম এবং তাদের কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মনুরা হলেন মানবজাতির প্রজাপতি এবং তারা বিভিন্ন যুগে পৃথিবী শাসন করেন। 2. মনুদের কার্যাবলী: প্রতিটি মনু তাদের যুগে ধর্ম প্রতিষ্ঠা এবং পৃথিবীর শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পাদন করেন। তাদের কার্যাবলী এবং অবদান এই অধ্যায়ে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। 3. ভগবানের আশীর্বাদ: মনুরা ভগবানের আশীর্বাদে তাদের কার্যাবলী সম্পাদন করেন এবং পৃথিবীতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। এই অধ্যায়টি ভবিষ্যতের মনুদের কার্যাবলী এবং তাদের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ এর অষ্টম স্কন্ধের দ্বাদশ অধ্যায়ে মহাদেব ও মোহিনী মূর্তির কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এই অধ্যায়ে বলা হয়েছে কিভাবে দেবতারা সমুদ্র মন্থনের সময় অমৃত লাভের জন্য মহাদেবের সাহায্য প্রার্থনা করেন। মোহিনী মূর্তি, যিনি বিষ্ণুর এক অপূর্ব রূপ, দেবতাদের সাহায্য করতে আবির্ভূত হন। মহাদেব মোহিনী মূর্তির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে অনুসরণ করতে থাকেন। এই অধ্যায়ে মহাদেবের মোহিনী মূর্তির প্রতি আকর্ষণ এবং তাঁর দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়ার কাহিনী বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে²³⁴। এই অধ্যায়টি আমাদেরকে শিখায় যে, এমনকি মহাদেবের মতো মহাপরাক্রমশালী দেবতাও বিষ্ণুর মায়ার দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেন। এটি ভক্তদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, যা ভগবানের মহিমা ও মায়ার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জাগায়।
শ্রীমদ্ভাগবতম, অষ্টম স্কন্ধ, একাদশ অধ্যায় "রাজা ইন্দ্রের দ্বারা অসুরদের বিনাশ" শিরোনামে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখানে প্রধান ঘটনাগুলি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো: এই অধ্যায়ে, দেবতারা, রাজা ইন্দ্রের নেতৃত্বে, অসুরদের বিরুদ্ধে তীব্র যুদ্ধে লিপ্ত হন। ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদে দেবতারা বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। রাজা ইন্দ্র তার শক্তিশালী বজ্র অস্ত্র ব্যবহার করে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যা অসুরদের পরাজয়ে সহায়ক হয়। অবশেষে, দেবতারা বিজয়ী হন এবং মহাবিশ্বে ভারসাম্য ও শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
শ্রীমদ্ভাগবতমের অষ্টম স্কন্ধের দশম অধ্যায়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে মহাযুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে। এই অধ্যায়ে, দেবতারা অসুরদের দ্বারা পরাজিত হয়ে ইন্দ্রের নেতৃত্বে ব্রহ্মার কাছে সাহায্যের জন্য যান। ব্রহ্মা তাদেরকে ভগবান বিষ্ণুর শরণাপন্ন হতে বলেন। ভগবান বিষ্ণু দেবতাদের আশ্বস্ত করেন এবং তাদেরকে অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য কৌশল দেন। এই অধ্যায়ে মূলত দেবতা ও অসুরদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় দেবতাদের বিজয়ের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবতমের অষ্টম স্কন্ধের নবম অধ্যায় মূলত ভগবান বিষ্ণুর মোহিনী-মূর্তি অবতারের কাহিনী নিয়ে। এই অধ্যায়ে, দেবতারা এবং অসুররা সমুদ্র মন্থনের সময় অমৃত লাভের জন্য একত্রিত হয়। যখন অমৃত বের হয়, তখন অসুররা তা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করে। দেবতাদের সাহায্য করার জন্য, ভগবান বিষ্ণু মোহিনী-মূর্তির রূপ ধারণ করেন, যা অত্যন্ত সুন্দরী নারী রূপে প্রকাশিত হয়। মোহিনী-মূর্তি অসুরদের মুগ্ধ করে এবং কৌশলে অমৃত দেবতাদের মধ্যে বিতরণ করেন. এই অধ্যায়ে ভগবান বিষ্ণুর কৌশল এবং অসুরদের মুগ্ধ করার ক্ষমতা বর্ণিত হয়েছে, যা দেবতাদের রক্ষা করতে সহায়ক হয়।
অষ্টম স্কন্ধের অষ্টম অধ্যায়ের শিরোনাম হল "ক্ষীরসাগর মন্থন"। এই অধ্যায়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে অমৃত লাভের জন্য ক্ষীরসাগর মন্থনের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। দেবতা ও অসুররা একত্রিত হয়ে মন্দার পর্বতকে মন্থনদণ্ড এবং বাসুকি নাগকে মন্থনের দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। মন্থনের ফলে প্রথমে হলাহল বিষ উৎপন্ন হয়, যা সমগ্র বিশ্বকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। তখন মহাদেব শিব সেই বিষ পান করে বিশ্বকে রক্ষা করেন। এরপর মন্থনের ফলে লক্ষ্মী দেবী, চন্দ্র, ঐরাবত হাতি, এবং অন্যান্য দেবতাদের আবির্ভাব ঘটে। অবশেষে, ধন্বন্তরি দেবতা অমৃতের কলস নিয়ে আবির্ভূত হন। এই অধ্যায়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং বিষ্ণুর মোহিনী মূর্তির আবির্ভাবের কথাও বর্ণিত হয়েছে, যিনি অসুরদের থেকে অমৃত ছিনিয়ে নিয়ে দেবতাদের প্রদান করেন। এই কাহিনী থেকে আমরা শিখি যে, ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে যে কোনো কঠিন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব, এবং ঈশ্বরের কৃপা ও সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণের অষ্টম স্কন্ধের সপ্তম অধ্যায়ে সমুদ্র মন্থনের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এই অধ্যায়ে দেবতা ও অসুররা অমৃত লাভের জন্য ক্ষীরসমুদ্র মন্থন করেন। মন্থনের জন্য তারা মন্দার পর্বতকে মন্থনদণ্ড এবং বাসুকি নাগকে মন্থনদড়ি হিসেবে ব্যবহার করেন। মন্থনের সময় এক ভয়ঙ্কর বিষ, হলাহল, উৎপন্ন হয় যা সমগ্র বিশ্বকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য মহাদেব শিব সেই বিষ পান করেন। বিষ পান করার ফলে তার কণ্ঠ নীল হয়ে যায় এবং তিনি নীলকণ্ঠ নামে পরিচিত হন। মহাদেবের এই ত্যাগ ও করুণার কাহিনী এই অধ্যায়ে বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণের অষ্টম স্কন্ধের ষষ্ঠ অধ্যায়ে দেবতারা এবং অসুররা একত্রিত হয়ে সমুদ্র মন্থনের জন্য একটি সন্ধি স্থাপন করে। এই অধ্যায়ে মূলত দেবতাদের এবং অসুরদের মধ্যে সমুদ্র মন্থনের প্রক্রিয়া এবং তার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সমুদ্র মন্থনের সময়, দেবতারা এবং অসুররা মন্দার পর্বতকে মন্থনদণ্ড এবং বাসুকি নাগকে মন্থনের দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। এই মন্থন থেকে অনেক মূল্যবান বস্তু এবং দেবতারা ও অসুরদের জন্য উপকারী বস্তু বেরিয়ে আসে। তবে, মন্থনের সময় প্রথমে বিষ উৎপন্ন হয়, যা সমগ্র বিশ্বকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এই বিষ থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য, মহাদেব শিব বিষ পান করেন এবং তাঁর কণ্ঠ নীল হয়ে যায়, যার ফলে তিনি নীলকণ্ঠ নামে পরিচিত হন। এই অধ্যায়ে দেবতাদের এবং অসুরদের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে সমুদ্র মন্থনের প্রক্রিয়া এবং তার ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। এটি আমাদের শেখায় যে, সহযোগিতা এবং একত্রিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বড় বড় কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ এর অষ্টম স্কন্ধের পঞ্চম অধ্যায়ে দেবতারা ভগবান বিষ্ণুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেন। এই অধ্যায়ে দেবতারা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং ভগবান বিষ্ণুর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। দেবতারা তাদের শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন এবং অসুরদের দ্বারা পরাজিত হচ্ছেন। ভগবান বিষ্ণু তাদের আশ্বস্ত করেন এবং তাদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন। এখানে উল্লেখিত ঋষি দুর্বাসা এবং দেবরাজ ইন্দ্রের কাহিনী হিন্দু শাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই কাহিনীটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ এটি সমুদ্র মন্থনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে। একবার ঋষি দুর্বাসা দেবরাজ ইন্দ্রকে একটি পুষ্পমালা উপহার দেন। ইন্দ্র সেই মালাটি তার হাতি ঐরাবতের গলায় পরিয়ে দেন, কিন্তু হাতিটি মালাটি মাটিতে ফেলে দেয়। অপমানিত হয়ে ঋষি দুর্বাসা ইন্দ্রকে অভিশাপ দেন, যার ফলে দেবতারা তাদের শক্তি, সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি হারিয়ে ফেলে। এই অভিশাপের ফলে দেবতারা অসুরদের দ্বারা পরাজিত হতে থাকেন এবং তাদের শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য ভগবান বিষ্ণুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। ভগবান বিষ্ণু তাদের সমুদ্র মন্থনের পরামর্শ দেন, যার মাধ্যমে অমৃত প্রাপ্তি সম্ভব হবে। এই অমৃত পান করে দেবতারা তাদের শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। এই কাহিনীটি আমাদের শেখায় যে অহংকার এবং গুরুজনদের প্রতি অবহেলা কখনোই ভালো ফল দেয় না এবং সঠিক পথে চলার জন্য আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে। এই অধ্যায়টি আমাদের আরও শেখায় সর্বদা বিষ্ণুর শরণে যাওয়া উচিত I কারণ ভগবান বিষ্ণুর পারেন আমাদের যাবতীয় বিপদ থেকে উদ্ধার করতে I